ইউক্রেনের হয়ে যুদ্ধ করছে বাংলাদেশি তায়িব

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে ইউক্রেনের হয়ে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত যুবক মোহাম্মদ তায়িব (১৮)। মা-বাবার নিষেধ অমান্য করেই ইউক্রেনের বিশ্ববিদ্যালয় পডুয়া এই তরুণ যুদ্ধে যাওয়ায় পরিবারের লোকজন এবং স্বজনরা খুবই উদ্বিগ্ন।

গাজীপুরের কাপাসিয়ার ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান দীর্ঘদিন থেকেই বসবাস করছেন ইউক্রেনে। তার দুই ছেলে তায়িব ও কারিম। কিয়েভেস্কি টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে পডুয়া তায়িব ইউক্রেনের হয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছেন। এ খবর শুনে তার দাদিসহ আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আয়ুবুর রহমান বলেন, ১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর আমি ইউক্রেনের উদ্দেশে দেশ ছাড়ি এবং সেখানের এক নারীকে বিয়ে করি। সংসারে মোহাম্মদ তায়িব ও মোহাম্মদ কারিম নামে দুজন সন্তানের জন্ম হয়।

তিনি বলেন, আমার বড় ছেলে তায়িব ইউক্রেনের হয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে গেছে। তায়েব ওই শহরের কিয়েভেস্কি টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। রাশিয়া যেদিন ইউক্রেনে অ্যাটাক করেছে, ওরা অনলাইনে খবর দেখেছে অ্যাটাকের। যেদিন রাশিয়া বোম্বিং শুরু করেছে ওইদিন সকালেই সে যুদ্ধে চলে গেছে।

সে বলেছে, আমাদের দেশ ধ্বংস করে ফেলছে, আমাদের দেশে রাশিয়ার শত্রু ঢুকছে, আমি আর ঘরে বসে থাকব না, আমি অস্ত্র ধরব, আমি এই দেশের নাগরিক, এটা আমার নৈতিক কর্তব্য। আমি আমার দায়িত্ব পালন করব। আমি আর সহ্য করতে পারছি না।

গাজীপুরের হাবিবুর রহমান আরও বলেন, তার ছেলেকে নিয়ে যেমন দুশ্চিন্তায় রয়েছেন, তেমনি গোটা পরিবারও রয়েছেন যুদ্ধ যন্ত্রণায়। তাদের ঘরে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ থাকলেও খাদ্য সংকটে পড়েছেন। বসবাসরত মারণাস্ত্রের হামলায় বারবার প্রকম্পিত হয়ে উঠেছে গোটা শহর, আর নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের।

তায়িবের বাবা আরও বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী মিলে তাকে অনেক বারণ করেছি। কিন্তু সে আমাদের কথা মানেনি। না মেনে সে বলেছে তোমরা আমাকে বারণ করো না। তোমরা আমাকে দোয়া করো। এই মুহূর্তে আমি আর ঘরে বসে থাকতে পারব না। কারণ, আমার এটা কর্তব্য এবং দায়িত্ব। আমার ওপর এটা ফরজ হয়ে গেছে দেশ শত্রু মুক্ত করার জন্য। যাওয়ার সময় সে বলেছে, আমি যখন বাড়িতে আসব, তখন আমি বীরের বেশে আসব, না হয় লাশ হয়ে ফিরবো।

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হাবিবুর ইউক্রেনে পড়েছেন যুদ্ধ পরিস্থিতে। এলাকার সবাই চাইছে তাদের প্রিয় মানুষ হাবিবুরের পরিবারের লোকজন নিরাপদ থাকুক, সুস্থ হয়ে আবার ফিরে আসুক এই বাংলার মাটিতে।

সূত্র : আরটিভি অনলাইন